RG Kar-এ নির্যাতিতার ন্যায় বিচার এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ১০ দফা দাবী নিয়ে আন্দোলনরত জুনিয়ার ডাক্তারদের আমরণ অনশন কর্মসূচী চলাকালীনই গতকাল ওই হাসপাতালের’ই জুনিয়ার ডাক্তার অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থার অত্যন্ত অবনতি হয়েছে। সকাল থেকেই তাঁর সুস্থতার বিভিন্ন মাপকাঠিতে গোলমাল দেখা দিতে থাকে। শরীরে মেলে কিটোন বডির উপস্থিতি। সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের গঠিত SSKM-এর চার সদস্যের দল অনশন স্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের শারীরিক পরীক্ষা নিরিক্ষা করেন। এরপরই অনিকেতকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়ার ডক্টর্স ফ্রন্টের অন্যান্য সদস্যরা। রাতেই CCUতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ইনচার্জ সোমা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। অন্যান্য আন্দোলনকারীদের’ও শারীরিক পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল হলেও, তা’ ক্রমশঃ খারাপ হচ্ছে।
আজ সকালে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে অনিকেতের এই অবস্থার দায় সরকার কেনো নেবেনা, তা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। আজ একগুচ্ছ কর্মসূচীর কথা তাঁরা ঘোষণা করেন। চিকিতসক দেবাশিস হালদার জানান, ডাক্তারদের একটি দল আজ নির্যাতিতার বাড়ি যাবেন। একইসঙ্গে স্লোগান দিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া আন্দোলনকারীদের বাড়ি গিয়ে পাশে থাকার বার্তা দেবেন তাঁরা। সাধারণ মানুষের মধ্যে লিফলেট বিলি করে ডাক্তারদের ১০ দফা দাবী যে সর্বসাধারণের’ই জন্য, তা’ জানানো হবে। আজ বিকেলে, তাঁদের অনশন মঞ্চে সকলকে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, কলকাতায় সাত জনের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে আরো দুই জুনিয়ার চিকিৎসকদের আমরণ অনশন কর্মসূচী ১৩০ ঘন্টা অতিক্রম করেছে। এই কর্মসূচীতে ক্রমশঃ বিভিন্ন সংগঠন যোগ দিচ্ছে। ডাক্তারদের এই দাবীগুলি কোনো বিলাসিতা নয়, বরং তা’ বাধ্যতামূলক শর্ত। এই পরিস্থিতিতে অবিলম্বে মীমাংসা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে সর্বভারতীয় চিকিৎসক সংগঠন-IMA. একইসঙ্গে ফেডারেশন অফ অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন- FEMA-র পক্ষ থেকেও গতকাল মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়। অনশন চলাকালীন ডাক্তারদের কোনো বিপদ ঘটলে, রাজ্যের সমস্ত ডাক্তার ও মেডিক্যাল কমিউনিটি সম্পূর্ণ কর্ম বিরতিতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল’ও জরুরী পরিষেবা ব্যতিত কাজকর্ম বন্ধ রেখেছে।
আজ সকালে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স ফের একবার এই পরিস্থিতিতে সরকারকে হস্তক্ষেপ করার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে। এর আগে গত তিনদিন একই দাবীতে তারা চিঠি দেন। এদিকে, ধর্মতলায় বহু মানুষ ধর্নাস্থলে গিয়ে ডাক্তারদের প্রতি সমবেদনা জানান। গতকাল’ও ‘অভয়া পরিক্রমা’ কর্মসূচীর সময় ব্যারিকেড ভেঙ্গে মিছিল এগোলে পুলিশের সঙ্গে ডাক্তারদের ধস্তাধস্তি বাধে। অন্যদিকে, পুজো মন্ডপে বিচার চেয়ে স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ধৃত ৯’জনকে আলিপুর আদালত, ১৭’ই অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশী হেফাজতে পাঠিয়েছে।