কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো CBI, RG KAR মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মেরও তদন্ত করবে। কলকাতা হাইকোর্ট ৩’সপ্তাহ পর CBIকে ওই তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য সরকার আগে এর জন্যে চার সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছিল। কিন্তু তা খারিজ করে দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ গতকাল বলেন, একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে। তাই মূল ঘটনার সঙ্গে আর্থিক দুর্নীতির তদন্তও করবে সিবিআই। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্তভার ইডি-কে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে মামলা করেন ওই হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি।
এদিকে, CBI –এর আবেদনে সাড়া দিয়ে আদালত, সন্দীপ ঘোষ সহ ৭ জনের পলিগ্রাফ টেস্টের জন্য অনুমতি দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। অন্যরা হল এই ঘটনায় ধৃত সঞ্জয়, চার চিকিৎসক ও এক সিভিক ভল্যান্টিয়ার। পলিগ্রাফ টেস্টের মাধ্যমে এই খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় সমাধান সুত্র খুঁজে পাওয়া যাবে বলে তদন্তকারীরা আশা করছেন।
সন্দীপ ঘোষকে গতকাল অষ্টম দিনেও সি বি আই আধিকারিকরা CGO কমপ্লেক্সে জেরা করেন। সেই সঙ্গে ধৃত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায় ঘনিষ্ট কলকাতা পুলিশের ASI অনুপ দত্তকে গভীর রাত পর্যন্ত জেরা করা হয়। ৮ থেকে ১৫ ই আগস্ট পর্যন্ত কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের মধ্যে ১০ জনকেও জিজ্ঞাসাবাদ চলে গভীর রাত পর্যন্ত। ধৃত সঞ্জয় রায়কে গতকাল শিয়ালদা আদালতে তোলা হলে, আবারো ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, সন্দীপ ঘোষকে আদালতের নির্দেশে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম জানিয়েছেন। তিনি গতকাল স্বাস্থ্য ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের ফের কাজে ফেরার আর্জি জানিয়ে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত ও পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হয়েছে। আর জি করের নিরাপত্তায় মোতায়েন করা হয়েছে আধাসামরিক বাহিনী । চিকিত্সকদের এই কর্মবিরতির জেরে সব থেকে সমস্যায় পড়ছেন গরিব রোগীরা। তাই রোগীস্বার্থের কথা মাথায় রেখে অবিলম্বে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের তিনি কাজে যোগদানের অনুরোধ করেন ।
RG KAR হাসপাতালের জুনিয়ার চিকিত্সকেরা অবশ্য তাদের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। আন্দোলনরত চিকিত্সকদের এক প্রতিনিধি দল গতকাল সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানতে চান। দু’পক্ষের মধ্যে প্রায় এক ঘন্টা কথাবার্তা হয়। পরে চিকিত্সকেরা সাংবাদিকদের বলেন, তদন্তের বিষয় এখনই কিছু প্রকাশ করা যাবে না বলে CBI-এর পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি তাদের কাছে সন্তোষজনক নয় বলে জানিয়ে আন্দোলনকারীরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন।
১১ দিনের কর্মবিরতির পর কল্যাণী এইমসের আন্দোলনরত চিকিত্সকরা অবশ্য গতকাল কাজে যোগ দিয়েছেন।