সংসদের উভয় কক্ষে আজও রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূর অভিভাষণের ওপর ধন্যবাদ সূচক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলবে।
লোকসভায় গতকাল এসংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করে বিজেপি-র রামবীর সিং বিধুরি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের কাজকর্ম এবং জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের বিষয়ে সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন। আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা থেকে রাজধানীর মানুষকে বঞ্চিত করা এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা সঠিকভাবে না দেওয়ার জন্য দিল্লিতে আপ সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। রাস্তার বেহাল দশা, বায়ু দূষণ এবং পরিবহণ সমস্যার মতো বিষয়গুলিও তুলে ধরেন।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল তাঁর সরকারী বাসভবনে বিলাস বহু জীবনযাপন করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে লোকসভায় বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেন, বিগত বছরগুলির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির এবারের ভাষণের কোন তফাৎ নেই। বেকারত্বের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তিনি বলেন, দেশের ভবিষ্যত যুব সমাজের হাতেই রয়েছে। তাই আলোচনায় তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
সরকার মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচীর বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। পর্যাপ্ত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও অন্যান্য দেশের তুলনায় উৎপাদন ক্ষেত্রে ভারত পিছিয়ে রয়েছে।
বিজেপি সাংসদ রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেন, মহাকুম্ভ মেলায় এপর্যন্ত ৩৫ কোটিরও বেশি মানুষ গেছেন। কিন্তু কংগ্রেস প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতার ঢাকতে মহাকুম্ভের সমালোচনায় সরব হয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের ডক্টর কাকলি ঘোষ দস্তিদার খাদ্য সামগ্রীর ওপর মুদ্রাস্ফীতি এবং কৃষকদের ঋণ ছাড়ের বিষয়ে কোন উল্লেখ না থাকার সমালোচনা করেন।
শিবসেনার অরবিন্দ গণপত সাওয়ান্ত, ডিএমকে-র কে কানি মোড়ি, বিজেপি-র গণেশ সিং, প্রতাপ চন্দ্র সারেঙ্গী, আর জে ডি-র অভয় কুমার সিনহা প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।
রাজ্যসভায় ধন্যবাদ সূচক প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সূচনা করে বিজেপি-র কিরন চৌধুরী বলেন, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষে সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। ভারত বর্তমানে প্রকৃত অর্থেই বিকশিত ভারতের পক্ষে এগিয়ে চলেছে।
বিজেপি সাংসদ বলেন, ইউ পি এ সরকার, ড স্বামীনাথন কমিটির দেওয়া সংস্থানগুলি হিমঘরে পাঠিয়ে রেখেছিল। বিকশিত ভারত, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক বিকাশ সুনিশ্চিত করবে তা নয়, আর্থিক নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষ্যে নেওয়া এক উদ্যোগ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উচ্চকক্ষে বিরোধী নেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে বেকারত্ব, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের মূল্যবৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের তুলনায় টাকার দামে পতনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। তাঁর অভিযোগ, সরকার, প্রতিবছর দু কোটি চাকরীর প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে না। সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে বিপুল পরমাণ আসন ফাঁকা পরে আছে। সাধারণ মানুষের কথা না ভেবে সরকার মুষ্টিমেয় শিল্পপতিদের সুবিধা করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আলোচনার মাঝেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূস গোয়েল এই অভিযোগ খন্ডন করে বলেন, এন সি আর বি-র তথ্য অনুযায়ী ১০ বছরের ইউপিএ এ জমানায় কৃষকের আত্মহত্যার সংখ্যা ১০ বছরের এনডিএ কার্যকালের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশী।
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, কৃষি, বেকারত্ব এবং মহিলাদের সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, এন ডি এ সরকারের গত ৫বছরে কৃষিক্ষেত্রে মজুরীর পরিমাণ সামান্যই বেড়েছে। প্রতি ৫ জন চাষীর মধ্যে ২ জনই ঋণভারে জর্জরিত।
ডিএমকে, বিজেডি, শিবসেনা, YSRCPর সাংসদরাও আলোচনায় অংশ নেন।