যথাবিহিত ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে শারদীয় দুর্গোৎসবে আজ পূজার্চনা চলেছে। দৃকসিদ্ধ পঞ্জিকা মতে ব্রহ্মমূহূর্তে মহাষ্টমীর পুজো শুরু হয়। সকাল ৬’টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত এই তিথি ছিল। আজ ভোরে মন্ডপে মন্ডপে চলে পুষ্পাঞ্জলী পর্ব। ৭’টা ১২ মিনিট পর্যন্ত চলে সন্ধি পূজা। এরপর তিথি অনুযায়ী মহানবমী শুরু হয়ে যায়। বহু জায়গায় আজ’ই মহানবমীর পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সন্ধিপুজোয় দেবী দুর্গা পূজিত হন দেবী চামুণ্ডা রূপে। এই পুজোয় দেবীকে ১০৮টি পদ্ম নিবেদন করা হয়। জ্বালানো হয় ১০৮টি প্রদীপ। মহানবমীতে দেবী দুর্গা তাঁর উগ্ররূপ অর্থাৎ মহিষাসুরমর্দিনী রূপে পূজিতা হন। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, এই দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধ করেন। কলকাতার বাগবাজারে সকালে অনুষ্ঠিত হয় বীরাষ্ঠমী উৎসব। হাওড়ার বেলুড় মঠ, সহ ঐতিহ্যবাহী পুজোমন্ডপ এবং বনেদী বাড়ীতে শুরু হয়েছে কুমারী পুজো।
অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে বিষ্ণুপুর মল্লরাজাদের হাজার বছরের বেশী প্রাচীন দুর্গাপুজোয় গর্জে ওঠে তোপধ্বনী। কয়েক হাজার মানুষ সেখানে সমবেত হন। কোচবিহারে বড়দেবীর বাড়িতে অষ্টমীর অঞ্জলী দিতে সকালে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম হয়। ৫০০ বছরের পুরোনো এই পুজোয় মোষ ও পায়রা বলির প্রচলন রয়েছে।
নদীয়ার কৃষ্ণনগরে রাজবাড়ির নাট মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় সন্ধিপুজো।
বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী ৪০০ বছরের প্রাচীন সর্বমঙ্গলা মন্দিরে রীতি ও পরম্পরা মেনে নবকুমারী পুজো হয়েছে। রাজ আমলের প্রথা অনুযায়ী এখানে নবমীতে উমা, অপরাজিতা, মালিনী, কাল সন্দর্ভা, সুভগা কুজ্জ্বিকা, মহামায়া সহ দেবীর ৯ টি রূপের কল্পনা করে ৯ জন কুমারীকে একসাথে পুজো করা হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার জাড়া রাজ পরিবারের দুর্গাপুজো চলতি বছরে ২২৫-তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। এই বংশের প্রতিষ্ঠাতা রামগোপাল রায়ের পৌত্র রাজীবলোচন রায়, পরাধীন ভারতে “রাজা” উপাধি লাভ করেছিলেন। তাঁর হাত ধরেই রায় পরিবারে দুর্গা পূজার প্রচলন হয়। প্রধানত বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতেই এই পরিবারে হয় দেবীর আরাধনা।
এদিকে, আজ’ও সকাল থেকেই উৎসাহী মানুষ কলকাতামুখী। ট্রেনে বাসে মেট্রোয় উপচে পড়া ভিড়। উৎসবের শেষ দুদিনে পুরোদমে প্রতিমা দর্শনের পালা চলছে।