যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শাসক দল সমর্থিত কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ওয়েবকুপার সম্মেলনে যোগ দিতে এসে আজ তীব্র বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র বিক্ষোভের জেরে আজ সকাল থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমুল উত্তেজনা ছিল। ‘ওয়েবকুপা’-র সভার আগে অশান্ত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে বাম ছাত্র সংগঠনগুলি বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। মানববন্ধন করে স্লোগান দেয় তারা। পাল্টা মানববন্ধন তৈরি করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর সদস্যেরা। এক সময় ওয়েবকুপার সদস্যদের সঙ্গেও ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে বাম ছাত্র সমর্থকরা।
ইতিমধ্যে সভা চলাকালীন সেখানে উপস্থিত হন শিক্ষামন্ত্রী। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। দেওয়া হয় ‘গো ব্যাক স্লোগান’। গাড়ি থেকে নেমে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর গাড়ি সহ বেশ কয়েকটি গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। শিক্ষামন্ত্রী সহ কয়েকজন ধস্তাধস্তির জেরে আহত হয়েছেন। ব্রাত্য বসুর কোমরে এবং হাতে চোট লেগেছে বলে সূত্রের খবর। যাদবপুরের অধ্যাপক তথা ওয়েবকুপার সদস্য ওম প্রকাশ মিশ্রকে তাড়া করেন বাম এবং অতি বাম সংগঠনের কয়েকজন পড়ুয়া। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যান।
তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থিত শিক্ষাকর্মীদের একটি কার্যালয়েও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
বামেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যে ভাবে অধ্যাপক সংগঠনের অনুষ্ঠানে হামলা চালানো হয়েছে তা পরিকল্পিত বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পরিকল্পনা করে শিক্ষা মন্ত্রীর উপর প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে বলে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ মন্তব্য করেছেন। আজ ঘটনার পরে হাসপাতালে যান কুনাল।
এদিকে ঘটনার পর যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রাস্তা অবরোধ করে বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। এস এফ আই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাম ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে গেলে শাসক দলের দুষ্কৃতিরা তাদের ওপর হামলা চালায়। গুরুতরভাবে কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছেন। তাদের কেপিসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে আগামী সোমবার ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এস এফ আই।
সিপিআইএম এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে গনতান্ত্রিক পরিস্থিতি নেই কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন।
অধ্যাপকদের সংগঠন জুটা আজকের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে তারা।
এদিকে, বামপন্থী ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষামন্ত্রী সহ অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের আক্রমণ করেছে বলে ওয়েবকুপা দাবি করেছে। সংগঠনের রাজ্য সহ সভাপতি অধ্যাপক সেলিম মন্ডল আকাশবাণীকে জানিয়েছেন, আক্রমণকারী ছাত্র-ছাত্রীদের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে।
ব্রাত্য বসুর হেনস্থার প্রতিবাদে আজ যাদবপুরের সুকান্ত সেতু থেকে প্রতিবাদ মিছিল বের করেছে শাসক দল। উপস্হিত আছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস সহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
এস ইউ সি আই কমিউমিষ্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আজকের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে। আজ এক বিবৃতিতে দলের রাজ্য সম্পাদক চন্ডিদাস ভট্টাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অবাঞ্ছিত ঘটনা কাম্য নয়।