যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অগ্নি সংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় ধৃত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র মহম্মদ সাহিলকে আজ আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১২-ই মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে দফায় দফায় উত্তেজনা তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। আহত হন ব্রাত্য বসুও ।
অন্যদিকে, বিক্ষোভকারীদের দাবি মন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছে এক ছাত্র। গতরাতেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন শিক্ষাবন্ধুর অফিসে আচমকা আগুন লাগে। যাদবপুরের ঘটনায় পুলিশে মোট ৭-টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এস এফ আই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাম ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন জমা দিতে গেলে শাসক দলের দুষ্কৃতিরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এর প্রতিবাদে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এসএফআই। বিভিন্ন জেলাতেও বামপন্থী ছাত্র-যুবরা আজ বিক্ষোভ দেখায়।
শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে এসএফআইয়ের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে বর্ধমানে ধুন্ধুমার বাঁধে। কার্জন গেট থেকে মিছিল করে পার্কাস রোড অবরোধ করেন তারা। পুলিশ তাদের বাধা দিলে, দু-পক্ষের ধস্তাধস্তি বাধে। এই ঘটনায় এসএফআইয়ের তিনজন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশাল পুলিশবাহিনী ও RAF মোতায়েন করা হয়। পরে সাংবাদিকদের এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক উষসী রায় চৌধুরী বলেন, মহিলা পুলিশ থাকা সত্ত্বেও পুরুষ পুলিশ কর্মীরা ছাত্রীদের টেনে হিঁচড়ে ভীড় থেকে বের করেছে। এই নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাবেন তারা।
হাওড়ার উলুবেড়িয়া স্টেশন থেকে গরুহাটা মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও পথ অবরোধ করে এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই|
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রেক্ষিতে বাম ছাত্র সংগঠন-এসএফআই অবিলম্বে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। এসএফআই এর রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে আজ কলকাতায় এক সাংবাদিক বৈঠকে গতকালের ঘটনাকে পূর্ব পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করে জানান, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু অশান্তি পাকানোর জন্যই যাদবপুরে গেছিলেন। রাজ্য জুড়ে আগামীকাল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘটের যে ডাক দেওয়া হয়েছে তার কোনো প্রভাব উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ওপর পড়বে না বলে তিনি জানান।
বাম ছাত্র সংগঠন-প্রগ্রেসিভ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন-PSU অবিলম্বে শিক্ষা মন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি হাবিবুর রহমান ও রাজ্য সম্পাদক কৌশিক ভৌমিক আজ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, আহত শিক্ষার্থীদের সর্বোৎকৃষ্ট চিকিৎসার ব্যবস্থা রাজ্য সরকারকে করতে হবে।
এদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ও অন্যান্য অধ্যাপকের ওপর হামলার অভিযোগে শাসকদল সমর্থিত শিক্ষক সমিতি ওয়েবকুপার সদস্যরা আজ দুপুরে যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ডে প্রতিবাদ কর্মসূচী পালন করে।
West Bengal Junior Doctors’ Association-WBJDA আজ এক বিবৃতিতে যাদবপুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা করে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে।