ভারত এবং লাওস প্রজাতন্ত্র আজ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, শুল্ক, অডিও-ভিজ্যুয়াল এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ সহ ছয়টি ক্ষেত্রে সমঝোতা পত্র এবং চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ভারত-রাষ্ট্র সংঘ উন্নয়ন অংশীদারীত্ব তহবিলের মাধ্যমে লাওসে পুষ্টি নিরাপত্তার উন্নতির জন্য একটি প্রকল্পে ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। লাওসের ভিয়েনতিয়েনে প্রধানমন্ত্রী এবং লাওসের প্রধানমন্ত্রী সোনেক্সে সিফানডোনের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারকগুলি বিনিময় করা হয়।
আজ ১৯তম পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তিনি লাওস প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থংলাউন সিসুলিথ এবং প্রধানমন্ত্রী সিফানডোনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করেছেন। ২১তম আসিয়ান-ভারত এবং ১৯তম পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন সফলভাবে আয়োজন করার জন্য লাওসের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান তিনি। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়েংটার্ন শিনাওয়াত্রা-র সঙ্গেও সাক্ষাত করেছেন শ্রী মোদী ।
প্রধানমন্ত্রী মনে করেন একটি মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, সমৃদ্ধ এবং নীতি-ভিত্তিক ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল শান্তি ও উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সমগ্র ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্বার্থে দক্ষিণ চীন সাগরের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আজ লাও প্রজাতন্ত্রর ভিয়েনতিয়েনে ১৯তম পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সংঘাতের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শ্রী মোদি বলেন, সর্বত্র উন্নয়ন হওয়া উচিত, সম্প্রসারণবাদ নয়। বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান সংঘাত দক্ষিণী বিশ্বের দেশগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সবাই চায় ইউরেশিয়া ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক। বর্তমান যুগ যুদ্ধের নয়। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কোন সমস্যার সমাধান পাওয়া যায়না।
সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং আন্তর্জাতিক আইনকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার উপরও তিনি গুরুত্ব দেন। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, সংলাপ ও কূটনীতির মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে হবে। ভারত এ ক্ষেত্রে সম্ভাব্য সব ধরনের উদ্যোগে শামিল হবে।
সন্ত্রাসবাদকে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমগ্র মানবজাতিকে একযোগে কাজ করতে হবে। সাইবার জগত, সামুদ্রিক পথে যাতায়াত ও মহাকাশ ক্ষেত্রেও সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে হবে। নৌচলাচল ও আকাশপথের চলাচল যাতে অবাধ হয় তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী টাইফুন ইয়াগির কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। ভারত অপারেশন সদ্ভাবের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকলকে মানবিক সহায়তা দিয়েছে।
পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনে ASEAN গোষ্ঠীর ১০টি দেশ ছাড়াও এবং আটটি অংশীদার রাষ্ট্র অংশ নেয়। অংশীদার দেশগুলি হল , অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র । তিমুর-লেস্তে পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দেয়।
সম্মেলন শেষে প্রধানমন্ত্রী আজ সন্ধ্যায় নতুন দিল্লি ফিরে এসেছেন।