বাংলাদেশে চট্টগ্রামের একটি আদালত, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে তাঁকে আজ জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশ গতকাল ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ইস্কন পুন্ড্রিক ধামের চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। তিনি সেখানে চট্টগ্রামের বিমান ধরতে গিয়েছিলেন। প্রসারভারতীর ঢাকার সংবাদদাতা জানাচ্ছেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট, দেশজুড়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও সনাতনী হিন্দুদের পক্ষে জোরালো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা অধিকার রক্ষায় তারা আট দফা দাবিও পেশ করে।
এদিকে, চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তারের পর থেকে বাংলাদেশ উত্তাল। তাঁর অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে ঢাকা, রংপুর, খুলনা, কক্সবাজার সহ বিভিন্ন শহরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন প্রতিবাদ, বিক্ষোভে সামিল হন। চট্টগ্রামের চেরাধি পাহাড় এলাকায় কয়েকহাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেন। ঢাকার শাহবাগ জংশনে দুষ্কৃতিরা হিন্দুদের একটি মিছিলে হামলা চালালে আহত হন দু’জন। আজও চট্টগ্রামের ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত চত্ত্বরে চিন্ময় কৃষ্ণর মুক্তির দাবিতে সরব হন তাঁর অনুগামীরা। সেইসময় বাংলাদেশের আইন বলবতকারী সংস্থাগুলি তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। ছোঁড়া হয় গ্রেনেডও।
ভারত, বাংলাদেশে হিন্দু এবং সব সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য সেদেশের প্রতি আবেদন জানিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেপ্তার, জামিনের আবেদন বাতিল ও তার প্রেক্ষিতে সেদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, প্রতিবেশী ওই দেশে হিন্দু এবং অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলারই প্রতিফলন এই ঘটনাও। সঙ্খ্যালঘুদের অধিকার ও তারা যাতে শান্তিতে সেদেশে বসবাস করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করার জন্যেও মন্ত্রকের পক্ষ থেকে আর্জি জানানো হয়েছে সেদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে।
এদিকে; বিজেপি, বাংলাদেশে ইসকনের সন্ন্যাসীকে গ্রেফতারের ঘটনায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে বিদেশমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এক্স হ্যান্ডেলে বিদেশ মন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের কাছে এই আর্জি জানিয়েছেন।
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে এবং সন্নাসীকে অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে বিজেপি পরিষদীয় দল আজ কলকাতায় বিধানসভার বাইরে বিক্ষোভ দেখায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা চলছে।