বঙ্গোপোসাগরে কেন্দ্রীভূত ঘূর্ণাবর্তটি আজ সুষ্পষ্ট নিম্নচাপের রূপ নিয়ে ঘন্টায় সাত কিলোমিটার বেগে পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ পারাদ্বীপের ৬৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব এবং সাগরদ্বীপের ৭৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ায় ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্হান করছিল। এই নিম্নচাপ ক্রমে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আগামীকাল সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
বৃহস্পতিবার ২৪ তারিখ সকালে, তা অতিপ্রবল সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। ওই দিন রাত সাড়ে ১১-টা থেকে শুক্রবার ভোর পাঁচটার মধ্যে পুরী ও সাগরদ্বীপ দিয়ে তার স্থলভাগে প্রবেশ করার সম্ভাবনা। সেই সময় ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত থাকতে পারে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। এর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে ওড়িশার উপকূলবর্তী কেন্দ্রাপাড়া, বালাসোর, পুরী সহ একাধিক উপকূলবর্তী এলাকায়। দুর্যোগ মোকাবিলায় তৎপর রয়েছে দুই রাজ্যের প্রশাসন। হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্টি ভেনাম ইঞ্জেকশান এবং ডায়ারিয়ার ওষুধ মজুত রাখতে বলা হয়েছে।
পূর্ব উপকূল রেল আগামীকাল থেকে পরবর্তী তিনদিনে ১৯৮টি ট্রেন বাতিল করেছে। খোলা হয়েছে সাইক্লোন সেন্ট্রার। দুর্যোগপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। দুই রাজ্যেই মোতায়েন রয়েছে একাধিক বিপর্যয় মোকাবিলা, সেনা, নৌ ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর দল।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার আগামীকাল থেকে শনিবার পর্যন্ত দুর্যোগপ্রবণ ৯’ জেলার সমস্ত স্কুল ও অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্রে ছুটি ঘোষণা করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ নবান্নে এসংক্রান্ত এক বৈঠকে জানান, বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রশাসন সদা তৎপর রয়েছে।
কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে এক নম্বর বিপদ সংকেত এবং সাগরদ্বীপে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।