প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মধ্যপ্রদেশের খাজুরাহোতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর শততম জন্মবার্ষিকীতে দেশের প্রথম বহুমুখী কেন-বেতোয়া জাতীয় নদী সংযোগ প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রথম ওমকারেশ্বর ভাসমান সৌর প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং ১,১৫৩টি অটল গ্রাম সুশাসন ভবনের ভূমি পূজা করেন। প্রয়াত বাজপেয়ীর স্মরণে একটি ডাকটিকিট ও কয়েনও প্রকাশ করেছেন ।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সুশাসন একদিনের অনুষ্ঠান নয়, এটি বিজেপি সরকারগুলির পরিচয়।
অন্যান্য দলের সরকারের সঙ্গে বিজেপি সরকারের তুলনা করার আহ্বান জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, বিজেপি সরকার সবসময়ই সুপ্রশাসন এবং প্রতিটি মাপকাঠিতে মানুষের প্রতি সমর্পণের জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, সুপ্রশাসন ও সুসেবার জন্য সর্বদাই অটলজী অনুপ্রেরণার উৎস।
দেশের জল সমস্যার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত দশকটি ভারতের ইতিহাসে জল নিরাপত্তা এবং জল সংরক্ষণের এক অভূতপূর্ব দশক হিসাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। অতীতে, কংগ্রেস সরকারগুলি ঘোষণা করা, ফিতে কাটা, প্রদীপ জ্বালানো, সংবাদপত্রে ছবি ছাপানোয় বিশেষজ্ঞ ছিল ,মানুষ এর সুবিধা পায়নি।
জল বিতর্কের কারণ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আজ সাত দশক পরেও দেশের অনেক রাজ্যের মধ্যে জল নিয়ে কোনও না কোনও বিবাদ রয়ে গেছে। কংগ্রেস যখন পঞ্চায়েত থেকে সংসদে ক্ষমতায় ছিল, তখন এই বিরোধগুলি সহজেই সমাধান করা যেত। কিন্তু কংগ্রেসের উদ্দেশ্য খারাপ ছিল, তাই তারা কখনও কোনও দৃঢ় প্রচেষ্টা করেনি। যখন অটলজির সরকার গঠিত হয়েছিল তিনি জল সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলি সমাধানের জন্য গুরুত্ব সহকারে কাজ শুরু করেছিলেন, কিন্তু 2004 সালে কংগ্রেস সরকার গঠন করার সাথে সাথেই কংগ্রেস অটলজির সমস্ত প্রচেষ্টা স্থগিত করে দেয়।। বাবাসাহেব আম্বেদকরের ভূমিকার প্রশংসা করে শ্রী মোদী বলেন, ডঃ আম্বেদকরের দূরদৃষ্টি ও দূরদৃষ্টি ভারতের জলসম্পদ, জল ব্যবস্থাপনা এবং বাঁধ নির্মাণকে শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। আম্বেদকরজি ভারতের প্রধান নদী উপত্যকা প্রকল্পগুলির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। বর্তমান কেন্দ্রীয় জল কমিশন গঠনের পিছনেও তাঁর প্রচেষ্টা রয়েছে। অথচ, কংগ্রেস কখনই দেশের ক্রমবর্ধমান জল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার প্রতি মনোযোগ দেয়নি এবং জল সংরক্ষণবিদ হিসাবে বাবাসাহেবের প্রচেষ্টাকে কখনই স্বীকৃতি দেয়নি।
দেশে পর্যটনের প্রসারে সরকারের প্রয়াসের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশ-বিদেশের পর্যটকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে এবং এখানে যাতায়াতকে আরও সহজ করে তুলতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য ই-ভিসার মতো প্রকল্প তৈরি হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল মঙ্গুভাই প্যাটেল, মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মোহন যাদব এবং কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সি আর প্যাটেল।
কেন-বেতোয়া জাতীয় নদী সংযোগ প্রকল্পের খরচ ৪৪ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা। প্রকল্প ব্যয়ের ৯০ শতাংশ কেন্দ্রীয় সরকার এবং ১০ শতাংশ সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার বহন করবে। এই প্রকল্পটি ৮ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি জমিতে সেচের সুবিধা প্রদান করবে। মধ্যপ্রদেশের ১০টি জেলার ২ হাজার গ্রামের ৭ লক্ষেরও বেশি কৃষক পরিবারও উপকৃত হবেন।
কেন-বেতোয়া লিঙ্ক ন্যাশনাল প্রকল্পে মধ্যপ্রদেশের ১০টি জেলার ৪৪ লক্ষ মানুষকে পানীয় জলের সুবিধা দেওয়া হবে। এই প্রকল্পে ১০৩ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ এবং ২৭ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।এই প্রকল্পটি উত্তরপ্রদেশের ২.৫১ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি জমিতে সেচের সুবিধা এবং ২১ লক্ষ মানুষকে পানীয় জলের সুবিধা প্রদান করবে। সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে, খরাপ্রবণ বুন্দেলখন্ড অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলস্তরের উন্নতি ঘটবে, শিল্পায়নের প্রসার ঘটবে, বিনিয়োগ ও পর্যটন বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।