ঘূর্ণিঝড় দানা ক্রমশ উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে অতিপ্রবল সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে। গত ৬ ঘণ্টায় এটি ১৫ কিলোমিটার বেগে এগিয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের শেষ খবর অনুযায়ী, এটি আজ ভোরে পারাদ্বীপ থেকে ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্ব, ধামারা থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং সাগরদ্বীপ থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্বে অবস্হান করছিল। এটি ক্রমশ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত থেকে আগামীকাল সকালের মধ্যে পুরী ও সাগরদ্বীপের মাঝামাঝি দিয়ে ভিতরকনিকা ও ধামারার কাছে স্থলভাগে প্রবেশ করবে। এই সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০, সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে আজ দুই মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলী, উত্তর ২৪ পরগনা ও ঝাডগ্রামে কমলা এবং দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলায় ভারী বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর।
আগামীকাল দুই মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কত জারি থাকছে। কলকাতা ও হলদিয়া বন্দরে ৯ নম্বর এবং সাগরদ্বীপে ৩ নম্বর বিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদর শহর ও প্রতিটি ব্লকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। নদীর ঘাটগুলিতে মোতায়েন রয়েছেন সিভিল ডিফেন্সর কর্মীরা। সন্দেশখালির ২নম্বর ব্লক ও হাসনাবাদে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং বসিরহাট ও হিঙ্গলগঞ্জে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল থাকছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় চলছে মাইকিং।
ইস্ট কোস্ট রেল ১৯৮টি ট্রেন বাতিল করেছে। পূর্ব রেলও সবরকমের সতর্কতামূলক ব্যবস্হা নিয়েছে। শিয়ালদা ডিভিশনে শহরতলির ১৬০-টি ট্রেন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ সন্ধে থেকে আগামীকাল সকাল ১০-টা পর্যন্ত দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র জানিয়েছেন।
পূর্ব রেলের হাওড়া ও শিয়ালদা ডিভিশনে বিশেষ হেল্প ডেস্ক খোলা হয়েছে। গার্ডেনরিচ এবং খড়গপুরে রেল দফতর ২৪ ঘণ্টার ওয়ার রুম খুলেছে।
এদিকে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে কলকাতা বিমান বন্দরে আজ সন্ধে ৬ টা থেকে আগামীকাল সকাল ৯-টা পর্যন্ত ১৫ ঘণ্টা উড়ান পরিষেবা বন্ধ থাকছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি হুগলীর গুপ্তিপাড়া, নদীয়ার শান্তিপুরের মধ্যে আগামীকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ফেরি চলাচল ।