গণ আন্দোলনের চাপে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটা নাগাদ সামরিক হেলিকপ্টারে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা ভারতের উদ্দেশে রওনা হন বলে খবর। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকর-উজ-জামান জাতির উদ্দেশে ভাষণে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন। রাজনৈতিক এই ক্রান্তিকালে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে। বিচার হবে সব হত্যার। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা খুবই ভালো হয়েছে বলেও জানান সেনা প্রধান। সংঘাত থেকে বিরত থাকার আবেদন জানিয়ে জেনারেল ওয়াকর উজ-জামান বলেন, দেশে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা এখন তাঁদের প্রধান কর্তব্য।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এখন বিক্ষোভকারীদের দখলে। গণভবনে ঢুকে জনতাকে তাণ্ডব চালাতে দেখা যায়। আওয়ামি লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। ধানমন্ডীতে শেখ হাসিনার কার্যালয়েও আগুন ধরানো হয়। ধানমন্ডীতেই হামলা চালানো হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বাড়িতে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভাঙতেও দেখা যায় আন্দোলনকারীদের।
এবছরই ১১ ই জানুয়ারি চতুর্থবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন আওয়ামি লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। তবে সেই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত গত মাসে উত্তাল হয়ে ওঠে। হিংসায় নিহত হন ২০০ জনের বেশি। সুপ্রিম কোর্টে সংরক্ষণের হার ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার পরেও আন্দোলন থামেনি। নির্বিচার হত্যা এবং ধরপাকড়ের প্রতিবাদে শুরু হয় ছাত্রদের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে এই আন্দোলন ক্রমশ পরিণত হয় গণ আন্দোলনে। অসহযোগ কর্মসূচীর কথা ঘোষণা করা হয়।
গতকাল নতুন করে হিংসায় প্রাণ হারান পুলিশ কর্মী সহ শতাধিক মানুষ। আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। আন্দোলনকারীরা আজ ঢাকায় লং মার্চের ডাক দিয়েছিলেন। গণবিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়ে রাজধানী ঢাকার বুকে। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে হয় শেখ হাসিনাকে।
এদিকে, এই অশান্ত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তের সর্বত্র উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বারানো হয়েছে বিএসএফ-এর নজরদারি।