ওড়িশায় ঘূর্ণিঝড় দানায় ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবর্তী কেন্দ্রাপারা, ভদ্রক, বালেশ্বর ও জগতসিংপুর জেলায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে যুদ্ধ কালীন তৎপরতায় ত্রান ও উদ্ধারের কাজ চলেছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী NDRF, ODRAF, দমকল এবং বিদ্যুৎ দপ্তর রাস্তা মেরামতি ও বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরুদ্ধারের জন্যে দিবারাত্র আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরন মাঝি আজ ভুবনেস্বরে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। জেলাশাসকদের তিনি আজকের মধ্যে ক্ষয় ক্ষতি সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে বলেছেন।
দানায় ঘরবাড়ি,মাঠের ফসল ও গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিদ্যুত পরিষেবা ব্যাহত হলেও কোন প্রানহানি হয়নি বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। আগামী ২ দিন সরকারী কর্মীদের সব ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, দানার প্রভাবে কলকাতায় বিকেল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১১৬ দশমিক ২ মিলিমিটার। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে যোদপুরপার্কে ১৬৩ মিলিমিটার, এছাড়া পাটুলিতে ১২৯, বালিগঞ্জ ও কামডহরীতে ১২৪ মিলিমিটার করে, মোমিনপুরে ১১১, তপসিয়ায় ১০৯ ও চেতলায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আজ সকাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ডায়মন্ডহারবারে, ৯৩ মিলিমিটার। এছাড়া কলাইকুন্ডায় ৯১, সাগরদ্বীপে ৯০, খড়গপুরে ৮৮ ও হলদিয়ায় ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃষ্টিতে তাপমাত্রা বেশ কিছুটা কমেছে। কলকাতায় আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের তুলনায় যা সাড়ে ৫ ডিগ্রি নীচে। সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বৃষ্টিতে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় জল জমে গেছে। লোয়ার রডন স্ট্রীটে হাঁটুর ওপর জল। এছাড়া সেন্ট্রাল এভ্যিনিউ, এম জি রোড, হসপিটাল রোগ, বিধান সরণী, আমহাস্ট্রীট, ঠনঠনিয়া, বি বি গাঙ্গুলী স্ট্রিট, এসএসকেএম হাসপাতাল, এনআরএস, ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজ, ক্যামাকস্ট্রিট, পার্কস্ট্রিট, লেক গার্ডেন্স, যোধপুরপার্ক, কালিঘাট, বালিগঞ্জ, বেহালা ও মোমিনপুরও জলমগ্ন। জল জমেছে বিধানসভা ভবন ও কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমের সামনেও। বৃষ্টিতে রাস্তাঘাটও প্রায় জনশূন্য। বাসের সংখ্যাও খুবই কম।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, পুরসভা দ্রুত জল সারানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। পুরভবনে আজ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গঙ্গার জলস্তর বেশি থাকায় সকালে লকগেট খোলা সম্ভব হয়নি। পরে অবশ্য সেগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। ৪০০ টি নিকাশি পাম্পের মাধ্যমে দ্রুত জল সরানোরও চেষ্টা চলেছে। তিনি এও বলেন, আগে যেখানে ২-৩ দিন জল জমে থাকতো, প্রশাসনের তত্পরতায় এখন সেখানে দু-তিন ঘন্টাতেই জল নেমে যাচ্ছে।
এদিকে, বিজেপি রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য্য বলেছেন, কলকাতায় নিকাশি ব্যবস্থার কোনোরকমই উন্নতি হয়নি। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ৩০ বছর আগে যেভাবে জল জমত, এখনও সেই একই চিত্র।
কলকাতায় আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে শ্রী ভট্টাচার্য্য, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলার ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন।